আজমীর হোসাইন, সাতক্ষীরাঃ
নিখোঁজের ৪০ ঘণ্টা পর সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাওয়ালখালি গ্রামে নবজাতক শিশুপুত্র সোহানের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার ভোর রাত ১ টার দিকে তাদের বাড়ির সামনের সেফটি ট্যাংক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শিশুটির বাবা সোহাগ হোসেন ও মা ফাতেমা খাতুনকে।
পুলিশ জানায়, দুই বছর আগে নানীর বাড়িতে আশ্রিতা থাকা অবস্থায় ফাতেমার সঙ্গে কলারোয়া উপজেলার সাহাপুর গ্রামের সোহাগ হোসেনের বিয়ে হয়।
শ্বশুরবাড়িতে কিছুদিন থাকার পর পারিবারিক কলহের কারণে ফাতেমা আবারও স্বামীকে নিয়ে নানীর বাড়ি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাওয়ালখালিতে চলে আসেন।
গত ১১ নভেম্বর সাতক্ষীরা শহরের আনোয়ারা ক্লিনিকে একটি পুত্রসন্তান জন্ম দেন ফাতেমা। শিশুটির নাম রাখা হয় সোহান হোসেন। জন্মের পর জানা যায় শিশুটি জন্ডিস, নিউমোনিয়া, হার্টের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত।
শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গত ২৫ নভেম্বর তারা সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন ।
পরদিন দুপুরে বাড়ির বারান্দায় ঘুমন্ত মায়ের পাশ থেকে শিশুটি হারিয়ে যায় বলে শিশুটির বাবা-মা জানান। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা সোহাগ হোসেন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেন।
সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মীর্জা সালাহ উদ্দীন জানান, পুলিশ এ ঘটনায় সন্দেভাজন শিশুটির মা ও বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানান, যে শিশুটি খুবই অসুস্থ ছিল।
সে জন্ডিস, রিকেট, নিউমোনিয়া ও হার্টের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিল। তিনি জানান, এ সমস্ত কারনে ও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনের যোগসাজশে শিশু হত্যা এবং মরদেহ গুমের ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
তিনি আরো জানান, শিশুটির বাবা সোহাগ হোসেন শিশুটিকে মেরে তাদের বাড়ির সামনের সেফটি ট্যাংকির ভিতরে মরদেহটি ফেলে দেয়। আর এ কাজে সহযোগিতা করে তার মা ফাতেমা খাতুন।
পুলিশ বিষয়টি জানার পর শনিবার ভোর রাতে মরদেহটি উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। বিস্তারিত পরে প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে জানাবেন বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।