অনলাইন ডেস্ক: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় ৯ নম্বরে থাকা আলোচিত ইয়াবা ব্যবসায়ী শাহজাহান মিয়া মাদক ও অস্ত্র মামলায় দেড় বছর কারাভোগের পর জামিন মুক্তি পেয়েছে। টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বরখাস্ত হওয়া সাবেক এই চেয়ারম্যানকে রাজকীয় সংবর্ধবনা দিয়ে এলাকায় আনা হয়েছে।
দুই শতাধিক মাইক্রোবাস, তিন শতাধিক মোটরসাইকেল, কয়েকটি খোলা জিপবহরে তাকে সংবর্ধনা দিয়ে মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে এলাকায় আনেন তার অনুসারীরা। এ সময় তাকে ফুলের মালায় বরণ করা হয়।
সংবর্ধনা বিষয়টি সম্পর্কে শাজাহান মিয়া বলেন, আড়াই শতাধিক নোহা গাড়ি, তিন শতাধিক বাইকসহকারে হাজারো মানুষ আমাকে সংবর্ধনা দিয়েছে। তাদের ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ।’
সংবর্ধনায় কোটি টাকার উপরে উপরে খবর হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একটি পয়সাও আমি খরচ করিনি। যারা আমাকে ভালোবাসেন তারাই এসব টাকা খরচ করেছেন। তবে কত টাকা খরচ হয়েছে তা আমি জানি না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি দক্ষিণ চট্টগ্রামের নির্বাচিত সর্বকনিষ্ঠ চেয়ারম্যান ছিলাম। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বহিষ্কার হয়েছি। হাইকোর্টে রিট করেছি। আশা করি আমি নির্দোষ প্রমাণিত হবো।
মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযানের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ২০১৯ সালের ২৬ জানুয়ারি বেনাপোল সীমান্তে থেকে শাহাজাহান মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরের দিন শাহাজানের দেওয়া তথ্যে ভিক্তিতে তার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার ইয়াবা, চারটি অস্ত্র ও ২৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। মাদক মামলায় আদালতে চার্জ গঠন হলে চেয়ারম্যান পদ থেকে শাহজাহান মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, ‘গায়ে লাগা কালিমা ঢাকতে তার (শাহাজানের) নির্দেশে রাজকীয় সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। কোটি টাকা খরচ করে সংবর্ধনা সফল করেছে তার সহযোগীরা।’
এদিকে, আলোচিত ইয়াবা ব্যবসায়ী শাহাজান মিয়ার রাজকীয় সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন সচেতন নাগরিকরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আদনান সামি একজন লিখেছেন, ‘একজন ইয়াবা কারবারীকে গাড়িবহরে শোডাউন দিয়ে, গলায় ফুলের মালা দিয়ে বরণ করার চেয়ে লজ্জার বিষয় আর কি হতে পারে। উনি একজন শীর্ষ ইয়াবা কারবারী, ওনার বাবাও একই অভিযোগে পলাতক রয়েছে। ধিক্কার জানাই এসব।’
আমিনুল ইসলাম নামে আরেকজন লিখেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী শাহাজান মিয়াকে এভাবে রাজকীয় সংবর্ধনা দিয়ে বরণ করে নেওয়া দুঃখজনক।’
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনার কাছে প্রথম শুনলাম। শাহজাহান মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এখনও তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়নি।’
একজন শীর্ষ ইয়াবা গডফাদারকে এভাবে সংবর্ধনার বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনেছি কিন্তু ওইদিন আমি জরুরি বৈঠকে চট্টগ্রামে ছিলাম। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।